আলীর হত্যাকারী ও তার শাস্তি | hazrat ali’s hotta karir o tar sasti | islamic post

আলীর হত্যাকারী ও তার  শাস্তি | hazrat ali’s hotta karir o tar sasti | islamic post 

আলি


হযরত আলীর হত্যাকারীর শাস্তির বর্ণনা

হযরত আসামাতুল উন্মাদানী (রা) বর্ণনা করেন, একদা আমি এক অরণ্যে টহল দিচ্ছিলাম। এক উপাসনাগার দৃষ্টি গোচর হলে আমি তার নিকট গেলাম। তার মধ্যে এক গির্জা দেখলাম যাতে এক পাদ্রী বলা আছে। তাকে বললাম (এ বিরান ভূমিতে) আপনার খানা কোত্থেকে আসে?

সে বলল, এক মাসের রাস্তার দূরত্ব থেকে। আমি বললাম আপনার চোখে দেখা সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনাটি আমাকে শুনান। সে বলল, তাহলে শুনুন।

একদা আমি বনে কুদরতের আশ্চর্য দৃশ্যসমূহ দেখছিলাম এবং আল্লাহ তায়ালার মহত্ব ও কুদরত নিয়ে চিন্তা করছিলাম, হঠাৎ দেখলাম যে, উট পাখীর মত বড় একটি পাখী এসে এ মাঠে বসল। এ বলে পাদ্রি হাত দিয়ে মাঠের দিকে ইঙ্গিত করল।


অতঃপর পাখিটি সে মাঠে বমি করে দিল। তার পেট থেকে মানুষের মাথা এবং পা বের হয়ে আসল। আবারো বমি করলে পায়ের গোছা বের হল এভাবে বার বার বমি করল আর একটি একটি করে মানুষের অঙ্গ বের হতে লাগল এবং সে অঙ্গগুলো মানব গঠনের শ্রেণী বিন্যাসে জুড়তে লাগল আর তাও বিদ্যুতের গতিতে। সমস্ত অঙ্গ বের হয়ে যখন পূর্ণাঙ্গ একটি মানুষের আকার গঠিত হলো তখন আল্লাহর কুদরতে সে বসে গেল।


অতঃপর যখনই সে লোকটি দাঁড়াবার চেষ্টা করল তখনি পাখী ঠোঁট দিয়ে তাকে এত প্রচণ্ড আক্রমণ করলো যে, সমস্ত অঙ্গগুলো টুকরো টুকরো হয়ে গেল আর পাখী তার সমস্ত অঙ্গকে আবার খেয়ে ফেলল। এভাবে অনেকদিন পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটছিল, এতে আমার বিস্ময় বাড়তে লাগল এবং আমার ইয়াক্কীন আরো মজবুত হল যে, মৃত্যুর পরও একটি জীবন হবে।

আরো পড়ুন>> দুরুদের বরকতে মুক্তার জন্ম


একদা আমি সে পাখীকে লক্ষ্য করে বললাম, হে পাখী। তোমাকে আমি সে সত্তার কছম দিয়ে বলছি যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তুমি একটু তোমার কাজ থেকে বিরত থাকো, আর আমাকে কিছু সময় দাও আমি লোকটিকে একটু জিজ্ঞেস করি কেন তার এ পরিণতি?

পাখিটি আরবী ভাষায় আমাকে বলল, সমস্ত সৃষ্টি জগত আমার প্রভূর নিয়ন্ত্রণে। রাজাধিরাজ চিরস্থায়ী হওয়া তারই গুণ, বাকী সব ধ্বংসপ্রাপ্ত, জীবন-মরণ সবই তার ইচ্ছায়। আমি এ ব্যক্তিকে সাজা দেওয়ার আদেশ প্রাপ্ত একজন ফেরেস্তা।

আল্লাহতায়ালা আমাকে এখানে আসার আদেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা সে ব্যক্তি থেকে জিজ্ঞেস কর সে কে? কেন তার এ পরিণতি? তাই তোমরা তার কাছে মনমত প্রশ্ন করতে পার। এ বলে সে ঐ লোকটির দিকে তাকালো।

আমি লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম, হে জালিম তুমি কে? তোমার ঘটনা কি আমাদেরকে একটু শুনাও।


হযরত আলীর হত্যা কারীর নাম

সে বলল, আমি হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু এর হত্যাকারী আবদুর রহমান ইবনে মুলজেম। তাকে শহীদ করে আমি যখন আল্লাহর দরবারে পৌঁছলাম, আল্লাহতায়ালা আমার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ভাল-মন্দ সব আমল বাজেয়াপ্ত করে ফেলেছেন এবং এ ফেরেশ্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে কিয়ামত পর্যন্ত আমাকে এভাবে সাজা দিতে থাকে। যেভাবে তোমরা দেখেছ। এ বলে লোকটি চুপ হয়ে গেল।

আরো পড়ুন>> মাছ আগুনে না পোড়ার আশ্চর্য ঘটনা


আর পাখি আগের মতো তার ঠোকর মারলে তাকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পৃথক পৃথক হয়ে বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল। অতঃপর সে পাখী এক এক করে তার সমস্ত অঙ্গ গিলে ফেল্ল। তারপর সে পাখি বল্‌ল,


হে আদম সন্তান। আমি তোমার এখান থেকে চলে যাচ্ছি। আমার একটি নসীহত শুনে রাখ। স্বীয় জাহের বাতেন কে তাক্বওয়া (পরহেজগারী) দিয়ে সুসজ্জিত রাখবে। আর যা তোমরা দেখেছিলে তা এমন এক পাপিষ্ঠের শাস্তি যে এমন এক মহান ব্যক্তিকে হত্যা করেছে যার সৌভাগ্য আল্লাহতায়ালা তার আমলনামায় লিখে রেখেছেন। তার হত্যাকারীর জন্য জাহান্নাম এবং শাস্তি ও তার আমলনামায় লিখা হয়ে আছে।


অতঃপর সে বলল, এই মাত্র আমার কাছে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সংবাদদাতা সংবাদ পৌঁছিয়ে গিয়েছেন যে, আমি যাতে এ ব্যক্তিকে আটলান্টিক মহাসাগরের ঐ দ্বীপে নিয়ে যাই, যেখানে জাহান্নামীদের (শরীরের) কিট বের হয়ে থাকে। আমার প্রতি নির্দেশ হয়েছে আমি যেন কিয়ামত পর্যন্ত তাকে এ শাস্তি দিতে থাকি । (তারিখে মদিনা দামেস্ক তারিখে ইবনে নাজ্জার)


*** ভাল লাগলে অবশ্যই লাইক, কমেন্ট, শেয়ার এবং ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন। সওয়াবের উদ্দেশ্যে বন্ধুদের নিকট ছড়িয়ে দিন।

Leave a Reply