নবীজীর হাত থেকে পানির নহর | nobijir hat theke panir nahor
– islamic post | bangla hadis –
সাহাবায় কেরামের ব্যাপারে রাসূল সা. এর ঘোষনা:
‘আসহাবি কাননুভূম’ আমার সাহাবীরা আকাশের নক্ষত্র ও তারকাতুল্য। তোমরা তাদের মধ্যে যাকেই অনুসরণ করবে সঠিক পথের সন্ধান পেয়ে যাবে। এই সরল স্বীকৃতি অকুণ্ঠ ও দ্বিধাহীন চিত্তে উচ্চারণ করেছেন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
‘আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছেন। তারাও আল্লাহ তাআলার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন।’ এই নিষ্কলুষ স্বীকৃতি ও মানপত্র স্বয়ং আল্লাহ তাআলার। যার সৌন্দর্যের পরশে সাহাবারা এত মোহনীয়, যার নূরের দ্যুতিতে সাহাবারা এত স্নিগ্ধ, যার কাঙ্কিত সান্বিধ্যে সাহাবারা এত সুশোভিত, তিনিই রাহমাতুল লিল আলামীন, নবীদের সেরা নবী, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। রাসূলের একটি কথা একটি কাজ বা একটি ঘটনাকে তারা আমানত হিসাবে সংরক্ষণ করতেন।
জীবনের দুরন্ত সফরে বাতিঘর হিসাবে ব্যবহার করতেন। যে কোনো মানবিক জাগতিক বা দীনি সমস্যায় তাঁর কথা ও কাজকে পুঁজি করে পরবর্তী কদম বাড়াতেন। হাদীস বর্ণনায় তারা যতটা না ছিলেন উৎসাহী তার চেয়েও অনেক বেশি সজাগ ও সতর্ক। ইচ্ছাকৃত কোনো বিকৃতি বা মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া তো দূরের কথা, তাদের বর্ণনায় সামন্যতম সন্দেহ পোষণেরও ন্যূনতম কোনো সুযোগ নেই।
আরো পড়ুন>> উটের সাথে রাসূল সা. এর কথা বলা
তেমনি একজন প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. , তাঁর মুখ থেকেই শোনা যাক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অলৌকিক একটি ঘটনার অপূর্ব বর্ণনা।
নবীজীর হাত থেকে পানির নহর | islamic post | bangla hadis
সাহাবী হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন:
একবার আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে উপস্থিত ছিলাম। তার সান্নিধ্যে থেকে জ্ঞানের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ এবং আত্মাকে জ্যোতির্ময় করে তুলছিলাম। সময় গড়িয়ে এক সময় আসর নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেল। সকলেই নামারে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। অজু করতে গিয়ে দেখা গেল ভীষণ পানি সংকট। যে পরিমাণ পানি মওজুদ আছে তা দিয়ে একজনের অজু পূর্ণ হবে কি না সন্দেহ।
অথচ তখন দরবারে রিসালাতে উপস্থিত লোকের সংখ্যা দেড় হাজারেরও অধিক। অধিকাংশের অজু প্রয়োজন। সকলের মধ্যে অস্থিরতা, কী হবে কী হবে অবস্থা। গত্যন্তর না পেয়ে বাধ্য হয়েই তখন হুজুরকে জানাতে হলো।
আরো পড়ুন>> উহুদ যুদ্ধের ইতিহাস
আল্লাহর কুদরতের প্রকাশ তো আমরা কতই অবলোকন করেছি। সমস্যাকে সমাধানে পরিণত করা তো তার জন্য কোন সময়ের ব্যাপার নয় । হুজুর বললেন, ‘একটি পাত্রে পানিটুকু নিয়ে এসো’ । তাঁর কথামতো পানি উপস্থিত করা হলো । তিনি পাত্রটিতে হাত চুবিয়ে আবার বের করে আঙ্গুলগুলো ছড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা আল্লাহ পাকের কুদরত দেখো’।
আগাগোড়া আমি ঘটনাটি অবলোকন করছিলাম আর অভিভূত হচ্ছিলাম। আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম, কিভাবে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দু’হাতের দু’আঙ্গুলের মধ্যবর্তী স্থান থেকে পানির ধারা প্রবাহিত হচ্ছে।
আমরা এতদিন শুধু হযরত মুসা আ. এর মু’জিযার কথা শুনেছি। শুনেছি যে, তার লাঠির আঘাতে পাথর ফেটে ঝরনা প্রবাহিত হতো। আমরা শুনতাম আর অবাক হতাম। আজ দেখলাম আর অবাক হতেও ভুলে গেলাম। সেখানে তো লাঠি আর আঘাতের প্রয়োজন ছিল। আর এখানে তো শুধু ইশারা ও ইচ্ছাই যথেষ্ট।
আরো পড়ুন>> আবু জেহেল কেন নবীজীকে ভয় পেত?
দেখতে দেখতে হুযূরের দু’ আঙুলের সংযোগস্থল দিয়ে এত অঝোর ধারায় পানি প্রবাতি হতে থাকল যে, আমরা দেড় হাজার লোক অজু করলাম। শুধু অজুই করলাম না, তৃপ্তি সহকারে পানও করলাম। আল্লাহর কুদরতের অনন্য প্রকাশ, দয়াল নবীর মোবারক হাত থেকে উৎসারিত এই বরকতময় পানির প্রতিটি ফোঁটা থেকে বরকত লাভের এই সুযোগ সাহাবায়ে কেরাম কি হেলায় হারিয়ে যেতে দিবেন? যে যেভাবে পারলেন, তার দ্বারা জীবন ধন্য করলেন।
***ভাল লাগলে অবশ্যই লাইক, ফলো ও শেয়ার করুন এবং আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি করে আমাদের পাশে থাকুন। ধ্যন্যবাদ***