যুবকের দুরুদ পড়ার আশ্চর্য ঘটনা | juboker durud porar history | islamic post




যুবকের দুরুদ পড়ার আশ্চর্য ঘটনা | juboker durud porar history

দরূদ


islamic post | islamic history

যুবকের দুরুদ পড়ার আশ্চর্য ঘটনা | juboker durud porar history | islamic post


আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুিমনগণ! তোমরা নবীর জন্য রহমতের দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।

(সূরা- আহযাব, আয়াত-৫৬)


হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. হতে বর্ণিত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত দিবসে আমার সবচেয়ে নিকটতম ব্যক্তি হবে যে আমার প্রতি সর্বাধিক দরূদ পাঠকারি।

(তিরমিযী শরীফ, হাদীছ নং- ৪৮৪)


যে কারনে যুবক টি সারাক্ষণ দুরুদ পড়তেন

একবার এক যুবক পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ করছিলেন। পাশে বসে  হযরত শায়খ শিবলী রহ. লক্ষকরে দেখলেন, যুবকটি তোয়াফের নির্ধারিত দোয়া না পড়ে সকল ক্ষেত্রেই কেবল দরূদ শরীফ পাঠ করে চলছে।  ইহাতে তার অন্তরে কৌতুহল সৃষ্টিহল, তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। হে যুবক! কাবা শরীফ তাওয়াফ কালে পড়ার জন্য ত র্নির্দিষ্ট দোয়া রয়েছে। তুমি তা না পড়ে কেবলমাত্র দরূদ শরীফ পাঠ করতেছ, তবে কি  দরূদ শরীফ ছাড়া ঐ সমস্ত দোয়ার কোনটিই তোমার মুখস্থ নেই?



যুবক জবাব দিল; জ্বী জনাব, অনেকগুলি দোয়াই আমার  মুখস্ত আছে। কিন্তু দুরুদ শরীফের ফায়দা এবং অশেষ মহিমায় যে প্রমাণ আমি নিজে পেয়েছি, তার তুলনায় অন্য কোন দোয়ায় তা পায়নি। এই জন্য আমি সকল ক্ষেত্রে শুধু দুরুদ শরীফ পড়তেছি। 



যুবকের এই কথায় হযরত শিবলী রহ. আরো বেশি কৌতুহলী হয়ে পরলেন। তিনি ঐ যুবক কে জিজ্ঞেস করলেন;  দুরুদ শরীফের মাহাত্ম্য সম্পর্কে তোমার যে অভিজ্ঞতার আভাস দিলে, তা আমার নিকট খুলে বল। 



যুবক তখন বলল: আমি অমুক সালে আমার পিতার সঙ্গে হজের নিয়তে আমাদের মাতৃভূমি হতে রওনা হয়ে যখন বাগদাদ শহরে উপস্থিত হলাম, তখন হঠাৎ একদিন আমার পিতা ভীষণ জ্বলে আক্রান্ত হয় এবং তার কিছুদির পর রাতের বেলা তার ইন্তেকাল হয়। ইন্তেকালের পর মুহূর্তে দেখা গেল তার চেহারা শুকরের আকৃতিতে পরিণত হয়ে গেছে।


এই অবস্থা দেখে আমি মনের দুঃখে কালিতে লাগলাম এবং একখণ্ড কাপড় দ্বারা তার বিকৃত চেহারা ঢেকে রাখলাম। এ বিষয়ে কারো নিকট প্রকাশ করতে আমার খুব লজ্জা বোধ হচ্ছিল। অথচ একাকী আমার পক্ষে পিতার কাফন দাফনের ব্যবস্থা করাও যে সম্ভব নয়। নিজের হাঁটুতে মাথা ঠেকিয়ে এইসব কথা ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত হয়ে কোন এক মুহুর্তে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পরলাম। 



এমন সময় আমি দেখলাম, হঠাৎ আমার রোমটা আলোয় আলোকিত হয়েগেল। অতি সুন্দর ও সুদর্শন এক ব্যক্তি আমার পিতার লাশের নিকট এসে, আমির পিতার চেহারা হতে কাপড় খানি সরিয়ে নিজের হাত দ্বারা তার চেহারা মুছে দিলেন।



আর অমনি সেই বিকৃত চেহারা পূর্বাবস্থায় ফিরে আসল এবং এমন সুন্দর ও উজ্জ্বল হইয়া উঠল যে উভাতে পূর্ণিমার চাঁদের মতো নূরানী চমক দেখা যাচ্ছিলো। এই অবস্থায় আগন্তুক ব্যক্তি বিদায় হয়ে যেতে চাইলে আমি তার  জামার আঁচল ধরে অত্যন্ত বিনয়ের সহিত আরজ করলাম- হুজুর! আমার এই চরম বিপদের মুহূর্তে আপনি আমার প্রতি অতুলনীয় দয়া দেখিয়েছেন। দয়া করে আপনার পরিচয়টুকু জানিয়ে আমাকে ধন্য করুন। 


তিনি বললেন: আমি হলাম মোহাম্মদ (সাঃ), পরিচয় পাওয়া মাত্রই আমি আবেগ ও শ্রদ্ধাপ্লুত অন্তরে তার পাক কদমে লুটিয়ে পরে চুমু খেলাম। আর আরজ করলাম ইয়া রাসুল আল্লাহ সঃ, আমার পিতার মৃত্যুর সংবাদ আপনার দরবারে কিভাবে পৌঁছলো?



করুণার ছবি দয়াল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, তোমার পিতা প্রত্যেক রত্রিতে আমার নামে ৩০০ বর দরূদ শরীফ পাঠ করিত।  উম্মতের দুরুদ আমার নিকট পৌঁছানোর দায়িত্ব যে ফেরেশতার উপর ন্যাস্ত রয়েছে, তিনি যথাসময়ে তাহা আমার নিকট পৌঁছে দিতেন।



কিন্তু আজ তোমার পিতার দরূদ না পৌঁছায় আমি সেই ফেরেস্তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ওমুক ব্যক্তির দরুদ শরীফ আজ দেখা যাচ্ছে না কেন? তখন তিনি তোমার পিতার মৃত্যুর সংবাদ এই দুরবস্থার কথা আমাকে জানায়। এই খবর পেয়ে আমার অন্তরে খুব দয়া হইল, তাই আমি নিজে এখানে চলে আসছি।

 


এই কথা বলে নবী হযরত সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বিদায় হয়ে গেলেন। আমি বিস্ময়াতিভূত অবস্থায় বাকি রাত কাটালাম। ফজরের নামাজের পরক্ষণে আমি দেখলাম- আমার পিতার ”জানাযা নামাজ” পড়ার জন্য চারিদিক হতে শহরে অগণিত লোক দলে দলে এসে জমায়েত হয়েছে।

আরো পড়ুন>> দরুদে তুনাজ্জিনা বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ 


এই বিরাট জনসমাগম দেখে আমি খুব আশ্চর্যিত হয়ে ভাবতে লাগলাম যে, আমার পিতার মৃত্যুর সংবাদ এই সমস্ত লোক জানলো কি ভাবে? শেষ পর্যন্ত আমি লোকদের এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে বলল; আমরা ভোরবেলা এই বলে এক ’গায়েবী আওয়াজে’ ঘোষনা শুনলাম যে, যে ব্যক্তি নিজের গোনাহ মাফ পেয়ে পাক- পবিত্র হতে চায়, সে যেন অমুক মহল্লায় গিয়ে অমুক মাইয়্যেতের জানাজার নামাজের শরিক হয়।

 আরো পড়ুন>> দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ


মোট কথা খুব গম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে জানাজা নামাজ পড়ার পর, পরম সম্মানের সহিত আমার পিতার লাশ দাফন করা হয়। এই যে এই ব্যাপারে আমি দুরুদ শরীফের যে অসীম মাহাত্ম্য দেখেছি, সেই কারণেই আমি আন্যান্য দোয়া বাদ দিয়ে কেবল দরূদ শরীফই পাঠ করছি। 

আরো পড়ুন>>  দুরুদের বরকতে মাছটি আগুনেও পোড়েনি 


যুবকের জবানে এই ঘটনা কথা শুনে হযরত শিবলী রহ. বললেন: হে বৎস, যে খুঁটির সন্ধান তুমি পেয়েছো, ইহা কে মজবুত রূপে আকড়ে ধরো কখনো ছেড়ো না। 


***আল্লাহ আমাদের কে বেশি বেশি দরূদ পাঠ করার তৌফিক দান করুনক। (আমিন)***


***ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক ও ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন এবং সওয়াবেরে উদ্দেশ্যে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply