যে কারনে কাদিয়ানীরা কাফের | je karone kadiyanira kafer

যে কারনে কাদিয়ানীরা কাফের | je karone kadiyanira kafer

কাদিয়ানী


সমস্ত নবী ও রাসূল যাদেরকে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির হিদায়াতের জন্য প্রেরণ করেছেন, সমষ্টিগতভাবে তাঁদের সকলের উপর ঈমান আনা ফরয। কুরআনে কারীমে নবীগণ সম্পর্কে যে আকীদা বা বিশ্বাস রাখার কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে:

لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهِ

“আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না।” (সূরা বাকারা: ২৮৫)


তবে আল্লাহ যাকে যে বৈশিষ্ট্য বা শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন তাঁকে সেভাবে মানতে হবে।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:

تلك الرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ

“এই রাসূলগণ, আমি তাদের কাউকে কারও উপর মর্যাদা দিয়েছি।” (সূরা বাকারা: ২৫৩)

অর্থাৎ, নবী-রাসূল হিসেবে সকলকে সমান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হবে। তবে যাকে আল্লাহ যে বিশেষ মর্যাদায় আসীন করেছেন, তাঁকে সেভাবেই মানতে হবে। এই নবী-রাসূলগণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ হচ্ছেন মুহাম্মাদ সা.। তাঁর পর আর কোন নবী-রাসূল পৃথিবীতে আসবেন না।


আর আসার প্রয়োজনও নেই। তাঁর মাধ্যমেই দীন পূর্ণতা লাভ করেছে। একেই বলা হয় আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত। ঈমানদার হওয়ার জন্য এ আকীদা পোষণ করা অপরিহার্য।


তাই মুহাম্মাদ সা.-এর পর কেউ যদি নবী বা রাসূল হওয়ার দাবী করে, তা হলে সে নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদী ও কাফের। অনুরূপভাবে যারা খতমে নাবুওয়াতে বিশ্বাসী নয় তারাও কাফের।

আরো পড়ুন>> হাদিসে বর্নিত কেয়ামতের আলামত


কাদিয়ানীদের আক্বীদা-

কাদিয়ানীদের দাবী গোলাম আহমদ কাদিয়ানী আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত নবী। আর সকল মুসলিমিনদের মতে কেউ কাফের হওয়ার জন্য এটুকু আক্বীদাই যথেষ্ঠ।

আরো পড়ুন>> উহুদ যুদ্ধের ইতিহাস


যে কারনে কাদিয়ানীরা কাফের | je karone kadiyanira kafer

খতমে নবুওয়ত অর্থ নবুওয়তের সিলসিলা বা ধারাবাহিকতার পরিসমাপ্তি। কুরআন-হাদীছ, ইজমা-কিয়াস তথা শরীয়তের দলীল চতুষ্টয়ের দ্বারা খতমে নবুওয়তের এ আকীদা প্রমাণিত। তাফসীরে মা’আরিফুল কুরআনের লেখক প্রখ্যাত মুফতী ও মুফাসসির আল্লামা শফী রহ. তার, ‘খতমে নবুওয়ত’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, খতমে নবুওয়তের বিষয়টি আল-কুরআনের শতাধিক আয়াত দ্বারা প্রমাণিত।

আরো পড়ুন>> রাসূলের প্রতি সাহাবীদের অনুসরণ


বরং গোটা কুরআনই খতমে নবুওয়তের প্রমাণ বহন করে। আর প্রায় দুই শতাধিক হাদীছ দ্বারা খতমে নবুওয়তের প্রমাণ পাওয়া যায়। মুহাদ্দিছগণের মতে এই সংক্রান্ত হাদীছগুলো মুতাওয়াতিরের পর্যায়ভুক্ত।

আরো পড়ুন>> সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম


রাসূল সা.-এর ইন্তেকালের পর সর্বপ্রথম যে বিষয়ের প্রতি সাহাবায়ে কেরামের ইজমা সংঘটিত হয় তা হলো খতমে নবুওয়ত। এবং এ ইজমার ভিত্তিতেই হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি.-এর নির্দেশে খালেদ বিন ওলীদের নেতৃত্বে আনসার ও মুহাজিরগণ মিথ্যা নবুওয়তের দাবীদার মুসায়লামাকে কাফের আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে জিহাদ করেন। এ যুদ্ধে বিপুল সংখ্যক সাহাবায়ে কেরাম শাহাদাতবরণ করেন।


আর যুক্তির নিরিখেও খতমে নবুওয়ত বিষয়টি প্রমাণিত। কেননা, যেসব কারণে ও প্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন তা বর্তমানে নেই।

যেমন:

ক. পূর্ববর্তী নবীর শিক্ষা বিলুপ্ত বা বিকৃত হয়ে গেলে।

খ, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে পূর্ববর্তী নবীর শিক্ষা পরবর্তীদের জন্য অসম্পূর্ণ বিবেচিত হলে।

গ. নবীর জীবদ্দশায় সহায়ক নবীর প্রয়োজন হলে।


কুরআন-হাদীছের প্রতি গভীরভাবে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় যে, উক্ত কারণসমূহের কোন একটি কারণও বর্তমানে বিদ্যমান নেই। কাজেই যৌক্তিক দিক থেকেও নতুন নবী আগমণের কোনরূপ সম্ভাবনা বা প্রয়োজন নেই।


মোটকথা, নবুওয়ত ও রিসালত সম্পর্কে কুরআন-হাদীছের বর্ণনা মোতাবেক সহীহ আকীদা পোষণ করার সাথে সাথে আমাদের নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ সা.- কে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে। এটা ফরয, ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ।


আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নবুওয়ত ও রিসালতের গুরুত্ব, নবী ও রাসূলের প্রকৃত মর্যাদা বুঝার তাওফীক দান করুন। আমীন!


*** ভাল লাগলে অবশ্যই লাইক, কমেন্ট, শেয়ার এবং ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন। সওয়াবের উদ্দেশ্যে বন্ধুদের নিকট ছড়িয়ে দিন।

Leave a Reply