শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখ? | sobe borat 2023 | শবে বরাতের নামাজের নিয়ম

শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখ? | sobe borat 2023 | শবে বরাতের নামাজের নিয়ম 

শবে বরাত



শবে বরাত ২০২৩ কত তারিখ? | sobe borat 2023আগামী ৭ ইং মার্চ রোজ মঙ্গল বার দ্বিবাগত রাত।


হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, একবার শা’বানের ১৫ তারিখের রাতে জিবরাঈল আ. তাশরীফ আনলেন এবং বললেন,

হে মুহাম্মাদ! মাথা আসমানের দিকে উঠান। আমি মাথা উঠিয়ে আসমানের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, জান্নাতের সকল দরজা খোলা।

১ম দরজায় এক ফেরশতা দাঁড়িয়ে আওয়াজ দিচ্ছে, সুসংবাদ সে ব্যক্তির জন্য যে এ রাতে রুকু করছে।


২য় দরজায় আর এক ফেরতা দাঁড়িয়ে ঘোষণা করছে, সুসংবাদ ঐ ব্যক্তির জন্য যে আজ রাতে সিজদা করছে।


৩য় দরজায় এক ফেরশতা আওয়াজ দিচ্ছে, সুসংবাদ সে ব্যক্তির জন্য যে আজ রাতে দু’আ করছে।


৪র্থ দরজায় এক ফেরশেতা আওয়াজ দিচ্ছে, সুসংবাদ সে ব্যক্তির জন্য যে আজ রাতে যিকির করছে।


৫ম দরজায় এক ফেরেশতা ঘোষণা করছে সুসংবাদ সে ব্যক্তির জন্য যে আজ রাতে খোদার ভয়ে রোনাজারী করছে।


৬ষ্ঠ দরজায় এক ফেরেশতা ঘোষণা করছে, সুসংবাদ আজ রাতে সমস্ত মুসলমানের জন্য।


৭ম দরজায় এক ফেরশতা ঘোষণা করছে, যদি কারও কিছু চাওয়ার থাকে তবে সে যেন চায়, তার দরখাস্ত কবুল করা হবে।


৮ম দরজায় এক ফেরেশতা ঘোষণা করেছে কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? তাকে ক্ষমা করা হবে।


রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন,

আমি জিবরাঈলকে জিজ্ঞেস করলাম, এ দরজাসমূহ কতক্ষণ খোলা থাকবে? জিবরাঈল উত্তরে বললেন, শুরু রাত থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত। জিবরাঈল আ. আরও বললেন, হে মুহাম্মাদ! আজ রাতে আল্লাহ তাআলা এত অধিক সংখ্যক লোকদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন যত সংখ্যক লোম কালব গোত্রের বকরীর রয়েছে।


তৎকালীন আরবের প্রায় প্রতিটি গোত্রের লোকেরাই বকরী পালন করতো। তন্মধ্যে একটা গোত্র ছিল কালব গোত্র। এক রেওয়ায়াত অনুযায়ী বনী কালব, বনী নাযীর ও বনী রবির ভেড়া বকরীর পশম সমপরিমাণ লোককে এ রাতে আল্লাহ ক্ষমা করেন।

আরো পড়ুন>> সত্যিই কি চাঁদ দ্বিখন্ডিত?


আর এ গোত্র গুলোর প্রত্যেকেরই প্রায় বিশ হাজার করে বকরী ছিল। এখানে মূলত কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা বুঝানো উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো আধিক্য বুঝানো। কেননা একটা বকরীর লোম গণনা করার কথা বললে, আমরা বলবো এটা অসম্ভব। অগণিত পশমে ঘেরা বকরীর শরীর। সেখানে হাজার হাজার বকরীর গায়ে কত লক্ষ কোটি লোম আছে তা কেই বা জানে।


স্বভাবতই মানুষ এটাকে অগণিত অসংখ্য বলবে। ঠিক তদ্রূপ এ রাতে অসংখ্য লোককে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।


তবে আট ব্যক্তিকে এ রাতে ও ক্ষমা করেন না, যদি তারা খাঁটিভাবে তাওবা না করে। ১. মুশরিক ২. যাদুকর ৩. গণক ৪. মদ্যপ ৫. সুদখোর ৬. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান ৭. আত্বীয়তা ছিন্নকারী ও ৮. ব্যভিচারী ও হিংসুক। আল্লাহ তাআলা এসব জঘন্যতম অপরাধ থেকে আমাদেরকে হেফাজত করুন! আমীন!

আরো পড়ুন>> তাওবা করার উপকারিতা


শবে বরাতের আমল:-

এ রাতে রাসূলুল্লাহ সা. থেকে তিনটি আমল প্রমাণিত রয়েছে।

১. কবর যিয়ারত করা।

২. রাত জেগে ইবাদত করা।

৩. পরদিন রোযা রাখা।


শবে বরাতের নামাজের নিয়ম :-

এই রাতে নির্দিষ্ট ভাবে বিষেশ কোন নামাযের ব্যাপারে গ্রহন যোগ্য কোন হাদিসে উল্লেখ্য নেই, তবে অধিন পরিমানে ইবাদাতের কথা উল্লেখ্য আছে। তাই আমরা সাধারণ নফল নামাযের মতই নামায আদায় করব ও কোরআন তেলাওয়াত এবং জিকির করব।

আরো পড়ুন>> সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম


হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. বলেন,

একবার ১৫ই শা’বান আমার পালা ছিল। অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ সা. সকল স্ত্রীদের নিকটই পর্যায়ক্রমে রাত কাটাতেন। এ ব্যাপারে কারও প্রতি তিনি কোন ধরনের বৈষম্য করতেন না। এভাবে একবার ১৫ই শাবান হযরত আয়েশার নির্দিষ্ট দিন ছিল।


রাসূলুল্লাহ সা. যথারীতি আয়েশার ঘরে প্রবেশ করে জামা-কাপড় খোলা শুরু করতেই আবার তা পরে নিলেন এবং ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।

আরো পড়ুন>> আল্লাহর ভয়ে যে চোখ কাঁদে


হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, এতে আমার অন্তরে খুব চোট লাগলো। এমতাবস্থায় সাধারণত নারীদের যে অবস্থা হয়ে থাকে আমার অবস্থাও ঠিক তা-ই হলো। আমার ধারণা হলো হয়ত তিনি আমার কোন সতীনের ঘরে গিয়েছেন।


আমি উঠলাম এবং একে একে আমার সতীনদের প্রত্যেকের ঘরে তল্লাশী চালালাম। কিন্তু কোথাও দেখলাম না। এরপর যেতে যেতে দেখি রাসূলুল্লাহ সা. জান্নাতুল বাকীতে (মদীনায় মুসলমানদের কবরস্থানে) দাঁড়িয়ে সকল মু’মিন-মু’মিনাত ও শুহাদাদের জন্য ইস্তিগফার করছেন। অমনি আমি চুপচাপ দ্রুত ফিরে আসলাম।


আমি তখনও হাঁফাতে ছিলাম, রাসূলুল্লাহ সা. এসে জিজ্ঞেস করলেন, আয়েশা হাঁফাচ্ছ কেন? আয়েশা রাযি. বলেন, তখন আমি আমার অবস্থা পুরোপুরি খুলে বললাম।


রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, হে আয়েশা! তুমি কি মনে কর আল্লাহ ও আল্লাহ’র রাসূল সা. তোমার উপর জুলুম করবেন? এরপর তিনি বললেন, এইমাত্র আমার নিকট জিবরাঈল এসেছিলেন।


তিনি বললেন, আজ ১৫ই শা’বানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তাআলা বনী কালবের বকরীর পশম সমপরিমাণ লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। অবশ্য মুশরিক, হিংসুক, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, টাখনুর নীচে কাপড় পরিধানকারী, পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান এবং মদ্যপকে ক্ষমা করবেন না।


এরপর রাসূলুল্লাহ সা. বললেন,

আয়েশা! তুমি কি আজ রাতে আমাকে ইবাদত করতে অনুমতি দেবে? ইবাদতে আবার স্ত্রীর অনুমতির কী প্রয়োজন; রাসূলুল্লাহ কি কারও অনুমতি নিয়ে ইবাদত করতেন? না, উদ্দেশ্য হলো, প্রতি রাতে তো নিয়ম অনুযায়ী ফরয-ওয়াজিব-নফল-তাহাজ্জুদ তিনি আদায় করতেন।


সাথে সাথে স্ত্রীদের হক আদায় করার জন্য, তাদের মন খুশি করার জন্যে তাদেরকেও কিছু সময় দিতেন। আজকে অনুমতি চাওয়ার উদ্দেশ্য হলো, আজকে সাধারণ অভ্যাসের বিপরীত অধিক সময় ইবাদতে কাটাবেন। এতে তার হক নষ্ট হওয়ার আশংকা ছিল। তাই তিনি অনুমতি চাইলেন।


আয়েশা রাযি. বললেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ, অবশ্যই। কেনই বা আমি অনুমতি দেবো না? এরপর তিনি নামায পড়া শুরু করলেন এবং এত দীর্ঘ সময় সিজদায় পড়ে রইলেন যে, এতে আমার সন্দেহ হলো, না জানি রাসূলের ইন্তেকাল হয়ে গেছে কি-না।


এরপর আমি উঠলাম এবং রাসূলের পায়ের তালুতে হাত রাখলাম, তাতে তিনি একটু নড়ে উঠলেন। আমি বুঝতে পারলাম তিনি জীবিত আছেন।


যার আগে পেছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে তাঁর ইবাদতের এই অবস্থা। আর আমরা হালুয়া-রুটির পাগল। শবে বরাত মানে মহিলাদের কাজ হালুয়া রুটি পাকানো। বাচ্চাদের কাজ পটকাবাজি। আর মাঝ বয়সী যারা আছে তাদের কাজ হলো শহর জুড়ে ঘুরে বেড়ানো।

আল্লাহ আমাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন (আমিন)


*** ভাল লাগলে অবশ্যই লাইক, কমেন্ট, শেয়ার এবং ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন। সওয়াবের উদ্দেশ্যে বন্ধুদের নিকট ছড়িয়ে দিন।

Leave a Reply