কবরের আযাব থেকে বাচাঁর উপায় | koborer ajab theke bachar upay | bangla hadis

 কবরের আযাব থেকে বাচাঁর উপায় | koborer ajab theke bachar upay

bangla hadis


bangla hadis | islamic post

কবরের আযাব থেকে বাচাঁর উপায় | koborer ajab theke bachar upay | bangla hadis

কোন এক কাজী সাহেব নিজের অন্তিম মুহূর্তে (মৃত্যুকালে) স্বীয় গর্ভবতী পত্নীকে এই অছিয়ত করে গেলেন যে, “যদি তোমার গর্ভে আমার পুত্রসন্তান জন্ম হয়, তবে আমার সন্তান কে দ্বীনি ইলম শিক্ষা দিও।” আমি চাই আমার সন্তার আল্লাহর হুকুম এবং তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ মেনে জীবন পরিচালনা করবে। এমতবস্তায় কাজী সাহেবের মৃত্যু হয়।


তার ইন্তেকালের কিছুদিন পর কাজী সাহেবের স্ত্রীর এক জন সুন্দর ফুটফুটে  পুত্রসন্তান জন্ম দিলো। অতঃপার বাবা ছাড়া এতিম এই ছোট্ট শিশুটি তার মায়ের স্নেহ ও ভালোবাসায় ধিরে ধিরে বাড়তে লাগলো। আর অন্যদিকে ছোট্ট শিশুটির মায়ের অপেক্ষা, কখন তার সন্তান কথা বলা শিখবে এবং মহিলাটি তার ম্বামীর দেয়া অসিয়ত পালন করবে? এভাবেই চলতে থাকে দিন, সপ্তাহ, মাস পেড়িয়ে কিছু বসৎর। একটা সময় মায়ের অপেক্ষার প্রহোর শেষ হয়, ছেলের মুখে বুলি ফুটতে শুরু করলো সে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেনা, ছোট বাচ্চা, আস্তে আস্থে সবেমাত্র বলা শিখতেছে। 


এর কিছুদিন পর তার মা তাকে সঙ্গে নিয়ে এক মক্তবের ওস্তাদজীর নিকট হাজির হয় এবং ওস্তাদজীর নিকট  মরহুম কাজী সাহেবের অছিয়তের কথা বর্ণনা করেন ও ছেলেটিকে ভালোভাবে দ্বীনি ইলম শিক্ষা দেওয়ার আবেদন জানালেন ।


ওস্তাদজী ইয়াতিম ছোট্ট শিশুটিকে খুব আদর-যন্তের সাথে গ্রহন কররেন। তিনি ছেলেটিকে যখন ‘বিসমিল্লাহ্ শরীফ’ পড়াতে আরম্ভ করলেন, তখন সাথে সাথে মাহান আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা ফেরেশ্তাদের হুকুম দিলেন- ওহে আমার ফেরেস্তারা, এই ছেলের পিতা অমুক কাজী সাহেব, নিজের বদ্ আমলের দরুন জাহান্নামে গ্রেপ্তার হয়ে আছে, তোমরা তাড়াতাড়ি যাও তাকে আযাব থেকে মুক্ত করে দাও! তখন ফেরেস্তাগন বলে হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি যে কাজী সাহেবের মুক্তির জন্য বলছেন, সে তো দুনিয়াতে পাপ করেছে এবং আপনার নাফরমানী করেছে।


এখন হঠাৎ এমন কোন আমল রয়েছে যার কারনে আপনি তাকে আযাব থেকে মুক্তি দেবেন? আল্লাহ ববেল; আমার এই বান্দার দুনিয়াতে রেখে আসা সন্তার, সে আমার কালাম পাঠ শিখতেছে। সে আমার নামের জিকির করতেছে। যার শিশু ছেলে আমার নাম নিতেছে, তাকে আযাব দিতে আমার লজ্জাবোধ হচ্ছে।


মোটকথা ছেলেটি এই দিকে ‘বিস্‌মিল্লাহ্’ পড়তে আরম্ভ করল আর ঐ দিকে আল্লাহর রহমতের সমুদ্রে জোয়ার উঠতে লাগলো । মহান রব্বে কারীম তার পিতার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিলেন । (এই কাহিনী ‘তফসীরে কবীর’ নামক কিতাবে বর্ণিত আছে।)


সংক্ষিপ্ত নসিহত

মৃত্যুর পর মানুষ অসহায় হয়ে যায়। তার কোন ব্যাপারে কিছুই করার ক্ষমতা থাকেনা। সে তখন হয়ে যায়, একটি ভিন্ন জগতের বাসিন্দা। যেখানে টাকা, পয়সা, সোনা, রুপা, ক্ষমতা, দাপট, শিক্ষা সকর কিছুই মূল্যহীন। উপকারে আসবে একমাত্র নেক আমল। তবে মৃত্যুর সাথে সাথে মানুষের নেকী উপার্যনের সকর রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু হাদিসে বর্নিত ৩ টি পথ বাকী থাকে।


হাদিস শরীফ বাংলাঃ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে এরশাদ করেন: যখন মানুষ ইন্তেকাল করেন, তখন তার সকল আমলের রাস্তা গুরো বন্ধ হয়ে যায়। তবে ৩ টি ব্যাতীত:

১। সদকায়ে জারিয়া, অর্থাৎ জীবতি থাকা কালীন সওয়াবের আশায় এমন কাজ করে যাওয়া যা দ্বারা সাধারন মানুষে ও পশু-পাখির ফায়দা/উপকার ও কল্যান হয়। যেমন- মসজিদ, মাদ্রাসা, হসপিটাল, রাস্তা,  ফলেল গাছ লাগানো ইত্যাদি সামাজিক ভালো কাজ।

আরো পড়ুন>> সাপ দ্বারা রাসূল সা. কে সাহায্য


২। উপকারী জ্ঞান, অর্থাৎ বেচেঁ থাকা কালীন মানুষ কে এমন জ্ঞান শিক্ষাদেয়া যা দ্বারা সমাজের এবং জাতির কল্যান হয়। যেমন: কাউকে কোরআন, হাদিস, বিভিন্ন মাসয়ালা-মাসায়েল, চিকিৎসা বিদ্যা ইত্যাদি মানুষের কন্যানকর জ্ঞান।

আরো পড়ুন>> হযরত আলীর হত্যাকারীর শাস্তি


৩। নেক সন্তান দুনিয়াতে রেখে যাওয়া, যে সন্তাত তার পিতা-মাতার জন্য দোয়া করবে। এবং পৃথিবীতে ভালো কাজ করবে। তবেই কবরে থেকে সওয়াব পাওয়া যাবে।

আরো পড়ুন>> আল্লাহর ভয়ে যে চোখ কাঁদে


আমাদের সতর্কতা:

অতঃএব আমাদের ভেবে দেখা দরকার, আমরা পৃথীবিতে কি কজ করে যাচ্ছি? কিসের পিছনে আমার মূল্যবান অর্থ ব্যায় করছি? আমি মানুকে কিরকম পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি? আমার পরামর্শে সাধারন মানুষের ক্ষতি হয় নাকি উপকার হয়? আমি আমার সন্তান দের কি শিক্ষা দিচ্ছি? আমার মৃত্যুর পর তারা আমার কি কাজে আসবে? এবং আমিইবা আমার পিতা মাতার জন্য কি করতেছি? আমার সন্তান আামার কতটা উপকারে আসবে?  


****আল্লাহ আমাদের এই হাদিসের উপর আমল করার তৌফিক দান করুন (আমিন)***

***ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক ও ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন এবং সওয়াবেরে উদ্দেশ্যে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন। 

Leave a Reply