কোনআনে বর্ণিত ঈসা নবীর ইতিহাস | history of jesus | islamic post

কোনআনে বর্ণিত ঈসা নবীর ইতিহাস

ঈসা নবীর ঘটনা


যখন ফেরেশতাগণ বলল, হে মারিয়াম আল্লাহ তোমাকে তার এক বানীর  সুসংবাদ দিচ্ছেন, যার নাম হল মাসীহ- মারিয়াম- তনয় ঈসা, দুনিয়া ও আখেরাতে তিনি মহাসম্মানের অধিকারী এবং আল্লাহর ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত।


যখন তিনি মায়ের কোলে থাকবেন এবং পূর্ণ বয়স্ক হবেন তখন তিনি মানুষের সাথে কথা বলবেন। এবং তিনি সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।

(সূরা- আলে আমরান, আয়াত- ৪৫,৪৬)


আমি মরিয়ম ছেলে ঈসাকে সুস্পষ্ট মোজেজা দান করেছি এবং পবিত্র রুহের মাধ্যমে তাকে শক্তি দান করেছি।

(সূরা- বাক্বারা, আয়াত- ৮৭)


যখন আহার কর, পান করো এবং চক্ষু শীতল কর। যদি মানুষের মধ্যে কাউকে তুমি দেখ, তবে বলে দিও: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে রোজা মানব করছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে কথা বলবো না।


অতঃপর তিনি সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলেন। তারা বলল: হে মারিয়াম, তুমি একটি অঘটন ঘটিয়ে বসেছ।


সে হারুন-ভাগিনী, তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মাতাও ব্যভিচারিনী ছিল না।


অতঃপর তিনি হাতে সন্তানের দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা বলল: যে কলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব?


সন্তান বলল: আমি তো আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী বানিয়েছেন।


আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামাজ রোজাাকাত আদায় করতে।

(সূরা-মারইয়াম, আয়াত-২৬, ২৭,২৮, ২৯, ৩০, 31)


আর বনি ইসরাইলরদের জন্য তাকে রাসূল হিসেবে মনোনীত করবেন। তিনি বলবেন নিশ্চয়ই আমি নিদর্শন সমূহ নিয়ে তোমাদের নিকট তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছি। আমি তোমাদের জন্য মাটির দ্বারা পাখির আকৃতি তৈরি করে দেই। তারপর তাতে যখন ফুৎকার প্রদান করি, তখন তা উড়ন্ত পাখিতে পরিণত হয়ে যায় আল্লাহর হুকুমে।আর আমি সুস্থ করে তুলি জন্মান্ধকে এবং শ্বেত ও কুষ্ঠ রোগীকে। আর আমি জীবিত করে দেই মৃতকে আল্লাহর হুকুমে। আর আমি তোমাদেরকে বলে দেই যা তোমারা খেয়ে আসো এবং যা তোমরা ঘরে রেখে আসো এতে প্রকৃষ্ট নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।

 

আর এটি পূর্ববর্তী কিতাব সমূহ কে সত্যায়ন করে, যেমন তাওরাত। আর তা এজন্য যাতে তোমাদের জন্য হালাল করে দেই কোন কোন বস্তু যা তোমাদের জন্য হারাম ছিল। আর আমি তোমাদের নিকট এসেছি তোমাদের পালনকর্তার নিদর্শন সহ। কাজেই আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার অনুসরণ কর।


নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার পালনকর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা তার এবাদত করো এটাই হলো সরল পথ।

 

অতঃপর ঈসা আ. যখন বনি ইসরাইলের কুফুরি সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারলেন,  তখন বললেন, কারা আছে আল্লাহর পথে আমাকে সাহায্য করবে? সঙ্গী সাথীরা বলল, আমরা রয়েছি আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি, আর তুমি সাক্ষী থাকো যে আমরা হুকুম কবুল করে নিয়েছি। 

(সূরা- আলে ইমরান, আয়াত- ৪৯, ৫০, 51, ৫২)


যখন হাওয়ারিরা বলল: হে মরিয়ম ছেলে ঈসা,  আপনার পালনকর্তা কি এরূপ করতে পারেন যে, আমাদের জন্য আকাশ থেকে খাদ্য ভর্তি খাঞ্জা অবতরণ করে দেবেন? তিনি বললেন: যদি তোমরা ঈমানদার হও, তবে আল্লাহকে ভয় কর।


তারা বলল: আমরা তা থেকে খেতে চাই, আমাদের অন্তর পরিতৃপ্ত হবে, আমরা জেনে নেব যে, আপনি সত্য বলছেন এবং আমরা সাক্ষ্যদাতা হয়ে যাব।


ঈসা ইবনে মরিয়ম বললেন: হে আল্লাহ আমাদের পালনকর্তা আমাদের প্রতি আকাশ থেকে খাদ্য ভর্তি খাঞ্জা অবতরণ করুন, তা আমাদের জন্য অর্থাৎ আমাদের প্রথম ও পরবর্তী সবার জন্য আনন্দোৎসব হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন হবে। আপনি আমাদের রুজি দিন। আপনি শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা। 


আল্লাহ বললেন: নিশ্চয়ই আমি সে খাঞ্জা তোমাদের প্রতি অবতরণ করব। অতঃপর যে ব্যাক্তি এর পরেও অকৃতজ্ঞ হবে, আমি তাকে এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের অপর কাউকে দেবো না


যখন আল্লাহ বললেন: হে ঈসা ইবনে মরিয়ম! তুমি কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে আমাকে ও আমার মাতা কে উপাস্য সাব্যস্ত করো? ঈশা বলবেন: আপনি পবিত্র! আমার জন্য শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোন অধিকার আমার নেই। যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই পরিজ্ঞাত; আপনি তো আমার মনের কথা ও জানেন এবং আমি জানিনা যা আপনার মনে আছে। নিশ্চয়ই আপনি অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত।

(সূরা-মাইদাহ, আয়াত-112,113,114,115,116)


আমি তো তাদেরকে কিছুই বলিনি, শুধু সে কথাই বলেছি যা আপনি বলতে আদেশ করেছিলেন যে, তোমরা আল্লাহর দাসত্ব অবলম্বন করো্। যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা আমি তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলাম। যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম। অতঃপর যখন আপনি আমাকে লোকান্তরিত করলেন, তখন থেকে আপনি তাদের সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। আপনি সর্ব বিষয়ে পূর্ণ অভিজ্ঞাত।


যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দেন, তবে তারা আপনার দাস এবং যদি আপনি তাদেরকে ক্ষমা করেন, তবে আপনি পরাক্রান্ত, মহাবিজ্ঞ। 

(সূরা -মাইদাহ, আয়াত-117,118)

 

আর তাদের একথা বলার কারণে যে, আমরা মরিয়ম পুত্র ঈসা মাসীহকে হত্যা করেছি যিনি ছিলেন আল্লাহর রাসূল। অথচ তারা না তাকে হত্যা করেছে, আর না শুলিতে চড়িয়েছে, বরং তারা এরূপ ধাঁধায় পতিত হয়েছিল। বস্তুত: তারা এ ব্যাপারে নানারকম কথা বলে, তারা এ ক্ষেত্রে সন্দেহের মাঝে পড়ে আছে, শুধুমাত্র অনুমান করা ছাড়া তারা এই বিষয়ে কোন খবরই রাখে না। আর নিশ্চয়ই তাকে তারা হত্যা করেনি।


বরং তাকে উঠিয়ে নিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা নিজের কাছে। আর আল্লাহ মহাপরাক্রমাশালী, প্রজ্ঞাময়।


আর আহলে-কিতাবদের মধ্যে যত শ্রেনী রয়েছে তারা সবাই ঈমান আনবে ঈসার উপর তাদের মৃত্যুর পূর্বে। আর কেয়ামতের দিন তাদের জন্য সাক্ষীর উপর সাক্ষী উপস্থিত হবে। (সূরা-নিসা, আয়াত-157, 158, 159)


মরিয়ম ছেলে মাসীহ রসূল ছাড়া আর কিছু নয়। তার পূর্বে অনেক রাসূল অতিক্রান্ত হয়েছেন আর তার মা একজন ওলী। তারা উভয়ই খাদ্য ভক্ষণ করতে।

(সূরা-মাইদা, আয়াত-৭৫)


হে আহলে কিতাবগণ! তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না, এবং আল্লাহর শানে নিতান্ত সঙ্গত বিষয় ছাড়া কোন কথা বলো না। নিঃসন্দেহে মরিয়ম পুত্র মাসীহ ঈসা  আল্লাহর রাসূল  এবং তার বাণী যা তিনি প্রেরণ করেছেন মরিয়মের নিকট এবং রূহ তারই কাছে থেকে আগত। অতঃএব তোমরা আল্লাহকে এবং তার রাসূলগণকে মান্য কর। আর এ কথা বল না যে, আল্লাহ দিনের এক, একথা পরিহার করো; তোমাদের মঙ্গল হবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ একক উপাস্য। সন্তান-সন্ততি হওয়াটা তার যোগ্য বিষয় নয়। (সূরা- নিসা, আয়াত-171)


তারা কাফের, যারা বলে যে, মরিয়ম তনয় মাসীহ-ই  আল্লাহ; অথচ মাসীহ বলেন, হে বনী ইসরাঈল, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর, যিনি আমার পালনকর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা। নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা- মাইদাহ, আয়াত-৭২)


স্মরণ কর, যখন মরিয়ম তনয় ঈসা আ. বলল: হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল, আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রাসূলের সুসংবাদ দাতা যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তার নাম আহমদ। (সূরা-ছফ্,- আয়াত-৬)


মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ঈসা ইবনে মরিয়ম তার শীষ্যবর্গকে বলেছিল, আল্লাহর পথে কে আমায় সাহায্যকারী হবে? শীষ্যবর্গ বলেছিল: আমরা আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বনি ইসরাইলের একদল বিশ্বাস স্থাপন করল এবং একদল কাফের হয়ে গেল। যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুদের মোকাবেলায় শক্তি যোগালাম, ফলে তারা বিজয়ী হলো। (সূরা-ছফ্,আয়াত-14) 

 ***ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক, ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন এবং সওয়াবেরে উদ্দেশ্যে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply