রাসূল সা. এর মেরাজ সফর | rasuler meraj sofor | bangla hadis

রাসূল সা. এর মেরাজ সফর | rasuler meraj sofor

বোখারী শরীফ

bangla hadis | islamic post

হযরত আনাস রা. বলেন, হযরত আবূযর রা. বর্ণনা করতেন যে,

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি মক্কা থাকাবস্থায় এক রাতে হঠাৎ আমার (উম্মে হানী রা.-এর) ঘরের ছাদ ফাঁকা হয়ে গেল। 

অতঃপর হযরত জিব্রাঈল আ. অবতরণ করলেন। তিনি আমার বক্ষ বিদীর্ণ (সিনাচাক) করে ‘জমজম’ কূপের পনি দ্বারা ধৌত করেন। তারপর (ঈমান ও হেকমতে ভরপুর) স্বর্ণের একটি পাত্র এনে তা আমার বক্ষে ঢেলে দিয়ে ফাড়া একত্রিত করে দিলেন। 


তারপর আমার হাত ধরে দুনিয়ার আসমানের দিকে উঠেন। যখন আমি দুনিয়ার আসমানের কাছে আসলাম, তখন জিব্রাঈল আ. আসমানের দ্বাররক্ষককে বললেন, দরজা খোল। দাররক্ষক প্রশ্ন করলেন, আপনি কে? তিনি বললেন আমি জিব্রাঈল। দ্বাররক্ষক পুনরায় প্রশ্ন করলেন, আপনার সাথে কেউ আছে কি? তিনি বললেন, হাঁ। আমার সাথে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আছেন। দাররক্ষক পুনরায় বললেন, তাঁর কাছে দাওয়াত নিয়ে পাঠানো হয়েছে কি? তিনি বললেন, হাঁ।

আরো পড়ুন>> শবে মেরাজ বিস্তারিত


অতপর যখন দরজা খুলল তখন আমরা দুনিয়ার আসমানের উপরে উঠলাম। হঠাৎ এক লোক তথায় এমনভাবে বসা আছেন, যাঁর ডানে বামে মানুষের পতিবম্ব রূহ সমূহ রয়েছে। তিনি যখন ডান দিকে তাকান তখন হাসেন, আবার যখন বাম দিকে তাকান তখন কেঁদে ফেলেন। তিনি বললেন, সত্য নবী ও যোগ্য সন্তানের ইনি জন্য খোশ আমদেদ । আমি হযরত জিব্রাঈল আ. কে বললাম, কে?

 আরো পড়ুন>> সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম


তিনি উত্তর দিলেন, ইনি হযরত আদম আ. আর আপনি তাঁর ডানে বামে প্রতিবিম্ব বা রূহগুলো দেখতে পাচ্ছেন, এগুলো তার আওলাদের রূহসমূহ। তার ডান দিকে অবস্থিত রুহগুলো বেহেশত বাসীদের আর বাম দিকে অবস্থিত রূহগুলো দোযখবাসীদের তাই তিনি ডান দিকে নজর করলে হাসেন এবং বাম দিকে নজর করলে কেঁদে ফেলেন।

 আরো পড়ুন>> তাওবা করার উপকারিতা


তারপর জিব্রাঈল আ. আমার হাত ধরে দ্বিতীয় আসমানের দিকে উঠেন। অতঃপর তার দ্বাররক্ষককে বললেন, দরজা খোল। তখন তার দ্বাররক্ষক তাই বলল যা প্রথম দ্বাররক্ষক বলেছিল ।

হযরত আনাস রা. বলেন, যখন জিব্রাঈল আ. নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সাথে করে হযরত ইদ্রীস আ. এর কাছ দিয়ে যেতে লাগলেন, তখন তিনি বলেলেন, যোগ্য নবী ও যোগ্য ভাইয়ের জন্য মারহাবা, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তখন হযরত জিব্রাঈল আ. কে প্রশ্ন করলাম, ইনি কে? তিনি বললেন, ইনি হযরত ইদ্রীস আ.।

 আরো পড়ুন>> জীবনের শেষ সময়ে রাসূলের নামাজ


অতঃপর আমি হযরত মূসা আ. এর কাছ দিয়ে যেতে লাগলাম, তখন তিনি বলেলেন, যোগ্য নবী ও যোগ্য ভাইয়ের জন্য মারহাবা, আমি তখন হযরত জিব্রাঈল আ.কে প্রশ্ন করলাম, ইনি কে? তিনি বললেন, ইনি হযরত মূসা আ.।


অতঃপর আমি হযরত ঈসা আ. এর কাছ দিয়ে যেতে লাগলাম, তখন তিনি বলেলেন, যোগ্য নবী ও যোগ্য ভাইয়ের জন্য মারহাবা, আমি তখন হযরত জিব্রাঈল আ.কে প্রশ্ন করলাম, ইনি কে? তিনি বললেন, ইনি হযরত ঈসা আ.।


অতঃপর আমি হযরত ইবরাহীম আ. এর কাছ দিয়ে যেতে লাগলাম, তখন তিনি বলেলেন, যোগ্য নবী ও যোগ্য সন্তানের জন্য মারহাবা, আমি তখন হযরত জিব্রাঈল আ. কে প্রশ্ন করলাম, ইনি কে? তিনি বললেন, ইনি হযরত ইবরাহীম আ.।

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তারপর আমাকে আরো উপরে উঠানো হল। আমাকে এরূপ সুউচ্চ সমতল ভূমিতে উঠানো হল, যেখান থেকে আমি ‘কলম’ চলার আওয়াজ শুনতে পেলাম ।


নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 

অতঃপর মহান আল্লাহ আমার উম্মতের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরজ করেন। আমি তা নিয়ে ফিরে আসতে মূসা আ.-এর কাছদিয়ে অতিক্রম করতে লাগলাম। তিনি আমাকে বললেন, মহান আল্লাহ আপনার উম্মতের উপর কি ফরয করেছেন? আমি, বললাম, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরজ করেছেন। মূসা আ. আমাকে পরামর্শ দিলেন, আপনি আপনার প্রভূর কাছে ফিরে যান। আপনার উম্মত এত ওয়াক্ত নামায আদায় করতে সক্ষম হবে না।

 

হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তাঁর পরামর্শে আল্লাহর কাছে ফিরে গেলে তিনি কিছু অংশ কমিয়ে দিলেন। তারপর আমি আবার হযরত মূসা আ.-এর কাছে ফিরে এসে তাঁকে বললাম, মহান আল্লাহ কিছু অংশ কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি পুনরায় বললেন, আপনি আপনার প্রভূর কাছে আবার যান, আপনার উম্মত এত ওয়াক্ত নামায আদায় করতে সক্ষম হবে না।

 

আমি তাঁর পরামর্শে পুনরায় আল্লাহর কাছে ফিরে গেলে আবার তিনি কিছু অংশ কমিয়ে দিলেন। আবার আমি হযরত মূসা আ.-এর কাছে আসলে তিনি পূর্ববৎ পরামর্শ দিয়ে বললেন, আপনি আপনার প্রভুর কাছে ফিরে যান। আপনার উম্মত এত ওয়াক্ত নামায আদায় করতে সক্ষম হবে না।

 

তাই আমি তাঁর পরামর্শ অনুসারে মহান আল্লাহর দরবারে ফিরে গেলে তিনি শেষ বারে বললেন, ফরজ নামায এবারে পাঁচ ওয়াক্ত নির্ধারণ করা হল। কিন্তু সওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই রয়ে গেল।

 

আর আপনি জেনে রাখুন, আমার কথার কখনো পরিবর্তন হয় না। এ ঘটনার পর আমি পুনরায় হযরত মূসা আ.-এর কাছে ফিরে আসলে তিনি আবার আমাকে পরামর্শ দিলেন, আপনি আপনার প্রভূর কাছে পুনরায় যান। আমি বললাম, আমি এ ব্যাপারে মহান আল্লাহর খেদমতে পুনরায় যেতে লজ্জা অনুভব করছি। (বোখারি শরীফ- ৩৪৯)


***ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক ও ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন এবং সওয়াবেরে উদ্দেশ্যে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply