শিরক আল্লাহর সবচে অপছন্দের গোনাহ | ‍shirok allahor sobche apochondo | islamic post

শিরক আল্লাহর সবচে অপছন্দের গোনাহ | ‍shirok allahor sobche apochondo 

ইসলামিক পোস্ট

islamic history and culture | islamic post

শিরক আল্লাহর সবচে অপছন্দের গোনাহ | ‍shirok allahor sobche apochondo | islamic post

আল্লাহর সবচে অপছন্দের গোনাহ:-

একবার হযরত মুসা আ. আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়ার উদ্দেশ্যে (তুর পর্বতের দিকে) গমন করছিলেন। পথিমধ্যে আল্লাহর এক বান্দা একজন আশেকের সহিত তার সাক্ষাৎ হলো। হযরত মুসা আ. দেখলেন অসংখ্য মাছি জাতীয় এক প্রকার বিষাক্ত পোকা তার সারা শরীরে অনবরত হুল ফুটাচ্ছে, অথচ এত কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও সে লোকটি আল্লাহর জিকির হতে বিরত হয়নি। বরং সে অলস না হয়ে সর্বদা আল্লাহর শোকর আদায় করতেছে।

মুছা নবী ও আল্লাহর আশেক এর কথোপকথন। 

এতো বেশি কষ্ট হওয়া সত্বেও লোকটিকে আল্লাহর শোকর আদায় করতে দেখে হযরত মুসা আ. আশ্চর্যান্বিত হলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেন: হে খোদার আশেক, এমন মুসিবতে থাকিয়াও তুমি খোদা তায়ালার কোন নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতেছ? সে উত্তর দিল: এই পোকাগুলি আমাকে অনবরত দংশন করতে থাকায় আমার কখনো নিদ্রা বা অলসতা আসতে পারে না। ফলে আল্লাহর জিকিরের ব্যাপারে আমার কোনরকম ত্রুটি হয় না। আমার একটি মুহূর্ত আল্লাহর যিকির শূন্য অবস্থায় কাটে না।

 


হযরত মুসা আ. তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কতকাল যাবত তুমি এই অবস্থায় আছো? সে জবাব দিল; ৪০০ বছর । হযরত মুসা আ. এর বিস্ময়ের মাত্রা আরও রেড় গেল। অতঃপর তিনি ঐ আবেদ লোকটি কে জিজ্ঞাসা করলেন। আচ্ছা, বর্তমানে তোমার মনে কোন কিছুর জন্য আরজু আছে কি? সে বলল; জ্বী ,  আমার দুইটি আরজু আছে। তখন মুসা আ. বললেন: আমাকে তা বলুন। লোকটি বলল; প্রথমতঃ আমি আলেমদের মুখে মুসা নামের একজন পয়গম্বর এর শীঘ্রই আবির্ভাব হবে বলে শুনেছিলাম, আমি তার সাক্ষাৎ লাভের আরজু পোষণ করি। আর দ্বিতীয় হলো একটু ঠান্ডা পানি পান করার জন্য করার জন্য আমার মন  চাচ্ছে।


 অতঃপর আল্লাহর ফায়সালা;

লোকটি এই কথা শুনে  হযরত মুসা আ. বললেন; তোমার উভয় চাওয়াই পূর্ণ হলো। আমি সেই মুসা নবী যার কথা তুমি আলেমদের কাছে শুনেছিলে। আর তোমার জন্য ঠান্ডা পানি আমি এক্ষুনি নিয়ে আসছি। এই বলে হযরত মুসা আ. পানি আনার জন্য চলে গেলেন। আর এই দিকে মালাকুল মউতের প্রতি অবিলম্বে ঐ লোকটির যান কবজ করার হুকুম আসলো। সুতরাং সাথে সাথেই লোকটির মৃত্যু  হল এবং বনের হিংস্র জন্তু এসে তার শরীর ছিঁড়ে ফেড়ে কিছু অংশ খেয়ে গেল। অবশিষ্ট হাড় চামড়া বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পড়ে রইল। 

আরো পড়ুন>> ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন


আল্লার পক্ষ থেকে মুছা নবীর প্রশ্নের জবাব:

হযরত মুসা আ. ঠান্ডা পানি নিয়ে ফিরে এসে লোকটির এই দুরবস্থা দেখে অত্যান্ত  দুঃখিত হলেন এবং আল্লাহর দরবারে এই বলে ফরিয়াদ করবেন। হে পরওয়ার; আপনি আপনার বন্ধুদের সাথেই যখন এমন নির্মম ব্যবহার করে থাকন, তখন না জানি দুশমন এর সাথে আপনার কি রূপ কঠোর ব্যবহার হবে? তৎক্ষণাৎ গায়েব থেকে আওয়াজ আসলো।

আরো পড়ুন>> সাহাবীরা রাসূলের কতটা অনুসরণ করতেন?

হে মুসা! আমি কিছুতেই এই লোকটির সাথে এমন ব্যবহার করতাম না, কিন্তু এই জন্যই করলাম যে, বিগত ৪০০ বছর যাবত সে আমার জিকির করে কাটিয়েছে, আর আমি  তার খাদ্য ও পানির ব্যবস্থা করে আসছি। কিন্তু আজ সে আমাকে ছাড়ে তোমার কাছে পানি চাইলো। কেন সে, আমার কাছে পানি চাইলে আমি কি উহার ব্যবস্থা করতে পারব না? ৪০০ বছর যাবত আমি যার আহার্য ও পানির ব্যবস্থা করে আসছি সে কিনা আমাকে বাদ দিয়া অন্যের কাছে পানি চাইল।

আরো পড়ুন>> কোরআনে বর্ণিত আদ জাতির ঘটনা


এটা আমার অপছন্দ হয়েছে।  এজন্য আমি তাকে পানি পান করার অবকাশ দিলাম না । আমার বান্দারা আমাকে বাদ দিয়ে অন্যের কাছে পানি চাইবে এটা আমার আদৌ পছন্দনীয় নয়। কেননা- ইহার মধ্যে শিরকের আভাস পাওয়া যায়। 


সংক্ষিপ্ত নসিহতঃ

মহান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাদের সকল প্রয়োজন গুলো মিটিয়ে থাকেন। সমস্ত কিছু করার ক্ষমতা একমাত্র তারই। আমরা তার সৃষ্টি মাত্র। আল্লাহ সবচেয়ে বড় এবং তিনি বান্দার জবানে তার বড়ত্ব প্রকাশ পছন্দ করেন। তিনি একক, তার কোন শরীক বা অংশীদার নেই । তিনি সমস্ত কিছুর মালিক ও প্রতিপালক। আর এটাই হল একজন মুসলমানের আল্লার প্রতি ইমান। তাই আমাদের জন্য কথনোই উচিত হবেনা, বিভিন্ন পীর বা মাজার ইত্যাদি যায়গায় সিজদা করা এবং তাদের কাছে সন্তার, সম্পদ ইত্যাদি চাওয়া। এছাড়াও আরো অনেক এমন কাজ রয়েছে যেগুলোর দ্বারা আমাদের ইমান, আমল সবই ধ্বংশ হয়ে যায়।


****আল্লাহ আমাদের ইমান এবং আমল সকল কিছু হেফাজত করুন (আমিন)***


***ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক ও ফলো করে আমাদের সাথে থাকুন এবং সওয়াবেরে উদ্দেশ্যে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply